যশোর জজকোর্টে বাবার হাত ধরে আইনপেশা শুরু, বর্তমানে খুলনা জজকোর্টে নিয়মিত আইন পেশায়চর্চারত রয়েছেন। স্ত্রী এড. সৈয়দা হাসিনা আক্তার মুন্নী ও আইন পেশায় রয়েছেন। ঘুরে বেড়ানো আর লেখালেখির নেশা ছোটবেলা থেকেই। এ পর্যন্ত তিনটি কাব্যগ্রন্থ
১. আত্মদ্রোহ ২০০৪
২. আগুনমালার পাঠ ২০১১
৩. শাস্ত্রকাণা ২০১৮
ছোটকাগজ আন্দোলনের সাথে লেখালেখির এগিয়েচলা।
দ্রষ্টব্য, করাতকল, প্রতিশিল্প,,জংশন,শাব্দীক, শূন্যস্থান, কামারশালা, শ্লোক, শিং সহ প্রতিষ্ঠানবিরোধী ছোটকাগজেই নিয়মিত লেখালেখি করছেন।
- বাংলাদেশে ধর্ষণ সংস্কৃতির সামাজিক নিরীক্ষণচিত্র │ সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ - নভেম্বর ১৩, ২০২০
- সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী লিটিলম্যাগাজিন সাহিত্যেচর্চার মতাদর্শ│সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ - সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০
- অনুভূতিবাদ│সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ - আগস্ট ১১, ২০২০
সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী লিটিলম্যাগাজিন সাহিত্যেচর্চার মতাদর্শ আন্দোলনের সাহিত্যিকরা প্রতিষ্ঠান ও বাঙলা সাহিত্যের নৈরাজ্য ফরমায়েশী সাহিত্যচর্চ্চার বিরুদ্ধে তাদের কণ্ঠস্বর উত্থাপন করেন। বাঙলা সাহিত্যে ছোটকাগজের সাহিত্যে আন্দোলনে সাময়িকী নিবেদিত সাময়িকী দিয়ে সাহিত্যের প্রতিষ্ঠা এবং ক্ষয়িষ্ণু সমাজের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের নগ্নপুঁজিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী লিটিলম্যাগাজিন সাহিত্যেচর্চার মতাদর্শ আন্দোলন বাঙলা সাহিত্যে,যা সারা বিশ্বে বাঙালির জন্য তাদের পরীক্ষামূলক অ-বাণিজ্যিক সাহিত্যের প্রকাশের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব দর্শন, স্বাধীনতা এবং নৈতিকতায় প্রচলিত মানদন্ডকে প্রত্যাখ্যান করে বাংলা সাহিত্যের ভাব ও ভাষা প্রয়োগে, লেখকদের শব্দ প্রয়োগে, ভাবনার বিমোচনে, প্রথাভাঙার প্রবণতায়,পরীক্ষা-নিরীক্ষা, নতুন উদ্ভাবন এবং চিন্তাভাবনায় এখন অত্যন্ত প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেছে। সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে একেকটি সংখ্যা প্রকাশ, লেখার মান, দর্শন, নিরীক্ষা করে ছোটকাগজের পাঠক তৈরির কাজটি সুন্দরভাবে করে যাচ্ছে।
লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাহি
লিটিলম্যাগ মুভমেন্ট এর মতাদর্শ বিরোধী ঘুরেফিরে গুটিকয় নির্দীষ্ট লেখকের লেখা নিয়ে নতুন নতুন সংখ্যা প্রকাশে বিশ্বাসী নয়, লিটিলম্যাগ মুভমেন্ট প্রতিনিয়ত নতুন নতুন লেখক তার লেখা, চীন্তা-চেতনা বিকশে পরীক্ষা-নীরিক্ষার ও প্রকাশের সুযোগ করে দেয়ায় বিশ্বাসী যশোররোড, বাংলাভাষার প্রথাবিরোধী ওয়েবম্যগাজিন। আশিদশকের পর হতে এমন কোন লিটিলম্যাগ খুজে পাওয়া যাবে না, যে লিটিলম্যাগ রাষ্ট্র ও গণ-আন্দোলন নিয়ে কাজ করেছে। তাদের অধিকাংশই নিজেদের লেখা আর গ্রন্থ সংখ্যা বাড়াতেই তারা আগ্রহী। রাষ্ট্রচীন্তা, সামাজিক অসংগতি-আন্দোর,প্রতিবাদ, ইতিহাস বিষয়ে লেখক/ সম্পাদকেরা লেখার চেয়ে মিনমিনে সাহিত্য রচনায় আগ্রহী বিধায় লিটিলম্যাগ মুভমেন্ট থমকে আছে।
সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী লিটিলম্যাগাজিন সাহিত্যেচর্চার মতাদর্শ সৃষ্টির সময় যে দিকটায় বেশী নজরদারি করার দরকার,কারন তা হোল-
১। সাহিত্যিকের সামাজিক দায়ীত্ব -সাহিত্যের শিক্ষা, সাহিত্যের অন্তর্নিহিত গভীর বক্তব্য, যা পাঠককে ভাবতে বা সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
২। সাহিত্যের সমকালীনতা -সাহিত্যে সমকালীন সময়ের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ঈঙ্গিত থাকা উচিত । যা পাঠকের মনন জগতে উত্তরণের অনুপ্রেরনা যুগাবে ।
৩। সাহিত্যের সর্বকালীনতা – সাহিত্য এমন ভাবে তৈরী হওয়া উচিত , যাতে যে সময়েই তা পাঠকের সামনে আসুক না কেন, পাঠক তার নিজের চারধারের উদ্ভুত পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারে ।
৪। সাহিত্যের সার্বজনীনতা- সাহিত্যের এই ধর্মটা আবশ্যিক। কারন সাহিত্যের এই ধর্মটা না থাকলে সাহিত্য একপেশে হয়ে পড়তে বাধ্য। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কথা, তাদের পাওয়া না পাওয়া, তাদের সুখ দু:খ, আনন্দ বিষাদ তথা ব্যথা বেদনা, প্রতি নিয়ত তাদের সামাজিক- অর্থনৈতির অবস্থান ও তার প্রভাবে তাদের মানসিক জগতের কাঙ্খিত পরিবর্তনই, সাহিত্যিক তার সাহিত্যের মধ্যে প্রকাশ করে ; আর সেই প্রকাশের আলোয় পথ দেখতে দেখতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ আলোকিত হয় , বিপথগামীরা সংযত হবার চেষ্ঠা করে, বিপদগ্রস্থরা নির্দেশিত পথে এগিয়ে যাবার জন্যে সংঘবদ্ধ হবার সাহস পায় ।সমাজ জন্জাল মুক্ত হয় ।
সাহিত্য সাহিত্যের মত চলবে, মানুষকে নিজের মানোন্নয়ন ঘটিয়ে সাহিত্যের স্বাদ গ্রহন করতে হবে । সাহিত্যিক কেন তার সাহিত্যের মানের অবনতি ঘটাতে যাবে ? তাদের চিন্তাধারায় তারা হয়তো ঠিক, কিন্তু তাদের এই মতামত এটাই প্রমান করে যে, তারা সার্বজনীন নয় । তারা সাহিত্য রচনা করেন সংখ্যালঘু এক বিশিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্যে, তারা সাহিত্য রচনা করেন হাততালি কুড়ানোর জন্যে, সাধারনের জন্যে নয় । এহেন বিপথগামীতার জন্যেই আজ বিদ্দ্বজন সাহিত্য ও ব্রাত্যজন সাহিত্য বোধের তথা সাহিত্যের বিভাজন । অর্থাৎ কিনা পণ্ডিতের জন্যে পণ্ডিতের তৈরী পণ্ডিতের সাহিত্য, আর সমাজের তলানিতে তলিয়ে যাওয়া সাধারনের সৃষ্ট সাধারনের জন্যে সাধারনের সাহিত্য । সাহিত্যের বুকেও তাই চলছে সাম্প্রদায়িক লড়াই ।
মোদ্দাকথা, দেশে দেশে জনশিক্ষার সঠিক বিকাশ না হওয়ার ফলেই, মানুষ সমাজটা সাহিত্যের জগতেও বিভাজিত হয়ে পড়েছে । সাহিত্য সমাজের বেশীরভাগ মানুষের বোধদম্য হচ্ছে না ,আবার কারোকাছে গ্রহনযোগ্য হচ্ছে না। সাহিত্যের সুদূর প্রসারী ফল সাধারনের মধ্যে বন্টিত হতে পারছেনা ।
মধ্যপন্থী বাহাদুর বিদ্দ্বজনরা নিজেদের বাজার দর বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন, প্রশাসনের মতো তেনারাও নিজেদের বিক্রী দর তৈরী করতে পেরেছেন ও পারবেন বলে ভাবছেন। দায়িত্বজ্ঞানহীন এহেন সাহিত্যিকরাই আসলে সমাজ জীবনের বোঝা, এদের সৃষ্টি মানুষের জন্যে নয় তাদের নিজের জন্যে । সার্বজনীনতা গুন না থাকায় তাদের সৃষ্টি সামাজিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ । সাহিত্যিককে এদিকেও নজর দিতে হবে।
শেয়ার করুন
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to share on Pinterest (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to share on Tumblr (Opens in new window)
- Click to share on Reddit (Opens in new window)
- Click to email this to a friend (Opens in new window)
মন্তব্য করুন